মিজবাহ উদ্দীন আরজু, (মহেশখালী প্রতিনিধি) ::
মহেশখালীর শাপলাপুর ইউপিস্থ পাট্টাছড়ি মাছের ঘেরে দুর্বৃত্তের গুলিতে মনির আহমদ (৬০) নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছে। সে মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ষাইট মারা গ্রামের মৃত আবদুর রহমানের পুত্র। তাঁর পুত্র আদর মনি বর্তমানে পুলিশে কর্মরত।
২ নভেম্বর (রবিবার) গভীর রাতে উপজেলার শাপলাপুরের পূর্ব সীমানায় ষাইটমারাস্থ নদীর পাশে পাট্টাছড়ি মাছের ঘোনায় এ ন্যাক্কারজনক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় সন্দেহজনক চারজনকে স্থানীয় ভিক্ষুব্ধ জনতা আটক পুলিশের হাতে সোপর্দ করার বিষয় নিশ্চিত করেন স্থানীয় এমইউপি দিল মোহাম্মদ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ষাইট মারা গ্রামের পূর্ব পাশে পাট্টা ছড়ি নামের একটি চিংড়ী ও লবণ ঘের রয়েছে। উক্ত ঘেরটি কুতুবদিয়া ও স্থানীয় বিভিন্ন লোকজনের মালিকানাধীন। এ ঘেরটি চিংড়ী চাষের জন্য ইজারা নেন মনির। অন্যান্য রাতের মতো সে ঘেরটি পাহারা দিচ্ছিল রবিবার রাত ৩টার দিকে ঘেরের বাসার পূর্ব পাশে নদীতে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ঘাট করতে দেখে। তখন ঘেরের বাসা থেকে সে বের হয়ে নোঙর করা ট্টলারের দিকে টচ্ লাইট জ্বলার সাথে সাথে ট্রলারের অপর প্রান্ত থেকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়েন। এতে সে চিৎকার করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। চিৎকার শুনে বাসায় থাকা অন্যান্য শ্রমিকরা বের হয়ে তাঁকে সেখান থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বদরখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত ডা: মোহাম্মদ রাকিবুল হাসান তাঁকে দ্রুত চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। কিন্তু চট্টগ্রামে না নিয়ে চকরিয়া জমজম হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করেন। ভর্তির কিছুক্ষণ পর সে মৃত্যু কোলে ঢলে পড়ে।
এদিকে এলাকার লোকজন জানান, দীর্ঘদিন ধরে মাছের ঘের করার জন্য উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের ঝাপুয়াস্থ রাসেল গং এর কাছ থেকে প্রতি সন সন অগ্রিম লাগিয়ত নিত নিহত মনির আহমদ। ওই ঘেরটি পরিচালনায় আজ তাঁর মৃত্যু ঘন্টা বাজল বলে দাবী তুলেন তারা। অপর দিকে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যে শাপলাপুর ইউপির সাবেক মেম্বার মাষ্টার রুহুল আমিনসহ অনেকেই জানান, উক্ত ঘেরটিতে ডাকাতি করার মতো মাছ হয়না। যা পায় তা সামান্য ; সেহেতু এরা ডাকাত নয়। তাঁকে পরিকল্পিত খুন করেছে। স্থানীয় ও পরিবারের ভাষ্য দীর্ঘদিন ধরে ওই ঘোনা নিয়ে বিরোধ চলমান ছিলো এবং উক্ত ঘোনা ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকি দিচ্ছিল। কিন্তু নিহত মনির আহমদ তা উপক্ষে করে তা পরিচালনা করে আসছে। তারা আরো জানান এভাবে গুলি করে হত্যা না করে পারত।
নিহত মনির আহমদে শ্যালক মোঃ ইসমাইল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এফবি’র নিজস্ব ওয়ালে পোস্টে জানান দেন, এলাকার কিছু কুচক্র মহল পাট্টাছড়ি ঘোনাটির পায়দা লাভের তার ভগ্নিপতিকে পরিকল্পিতভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
মহেশখালী থানার ওসি মোঃ কাউছার হামিদ জানান, লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে কক্সবাজার মর্গে প্রেরণ করেছেন। স্থানীয়দের সহায়তায় চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।