ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ ফরিদপুরের ভাঙ্গার আড়িয়ালখাঁ নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার ১০ জন শ্রমিক আহত হয়েছে ও একটা ট্রলার সহ ড্রেজার মেশিন পুড়িয়ে দিয়েছে । মঙ্গলবার রাতে বালু ব্যবসায়ী সাবেক নিক্সন চৌধুরীর সমর্থক দুইজনকে আটক করে বুধবার দুপুরে তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
এর আগে সোমবার রাতে রিপন, কুটি, সরোয়ার তাদের লোকজন নিয়ে শাহজাহান, সুরুজের ট্রলারে হামলা ও অগ্নি-সংযোগ করে।
আটক বালু ব্যবসায়ীরা হলো, ভাঙ্গা উপজেলার কাউলীবেড়া ইউনিয়নের চরমুঘডুবা গ্রামের মৃত্যু মোফাজ্জেল হোসেন খাঁনের পুত্র মাইনুল ইসলাম খাঁন রিপন (৫২) ও দোয়াইর গ্রামের মৃত্যু শাজাহান তালুকদারের পুত্র খালিদ হোসেন ওরফে কুটি তালুকদার(৪৭)।
নাম প্রকাশ না করা সত্বে এলাকাবাসী জানায়,
আড়িয়ালখাঁ নদীর চর থেকে অবৈধ ভাবে এলাকার দুইটি শক্তিশালী গ্রুপ বালু উত্তোলন করে আসছে। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেয় রিপন, কুটি ও সরোয়ার ও অপরটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেয় নাসিরাবাদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান ও সুরুজ মেম্বার ।
সোমবার গভীর রাতে শাহজাহান ও সুরুজ মেম্বার ড্রেজার বসিয়ে চর থেকে বালু উত্তোলন করিতেছে। একথা শুনে রিপন, কুটি, সরোয়ার সহ তাদের লোকজন নিয়ে শাহজাহান ও সুরুজের ট্রলারের লোকজনের উপর হামলা করে। ট্রলার সহ একটি ড্রেজার মেশিন পুড়িয়ে দেয়। হামলায় ১০/১২ জন লোক আহত হয়। কয়েকজন পানিতে ঝাঁপ দিয়েছে । রাতভর এই দুইটা গ্রুপ অবৈধ ভাবে আড়িয়ালখাঁ নদীর চর থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার বালু উত্তোলন করে ভাঙ্গা সহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে আসছে। আমাদের এলাকার পাকা রাস্তা খুবই ক্ষতি গ্রস্ত হয়। এই দুই গ্রুপের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
এলাকাবাসীর দাবি, এই অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানান।
এ বিষয় বালু ব্যবসায়ী নাছিরাবাদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান খাঁন বলেন, আমি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করি না। রিপন, সরোয়ার ও ফিরোজ বরিশাল থেকে ভাড়ায় এনে বালু উত্তোলন করে । শুনেছি রাতে সুরুজ মেম্বারের ট্রলারে হামলা ও মারধর করে। একটি ট্রলার সহ ড্রেজার মেশিনটি পুড়িয়ে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে হামলায় আহতরা জানায়, আমরা ১০/১৫ লোক ও একটি ট্রলার সহ ড্রেজার নিয়ে বরিশাল থেকে নদীতে বালু উত্তোলনের জন্য ভাড়ায় এসেছি। এই এলাকার লোকজন এসে আমাদের উপর হামলা করে ও বোম ফুটায় । তখন আমাদের একটি ট্রলার ও ড্রেজার মেশিন পুড়িয়ে দেয়। আমাদের সবাই হামলায় আহত হয়েছে। কেউ নদীতে ঝাঁপ দিয়েছি। বালু উত্তোলনের কাজটি অবৈধ। তাই আমরা কোন অভিযোগ দিব না এবং সাক্ষী দিব না।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মোকসেদুর রহমান জানান, ভাঙ্গা উপজেলার বালিয়াহাটি এলাকায় রিপন ও শাহজাহান চেয়ারম্যানের গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে আড়িয়ালখাঁ নদী থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে। সোমবার দিবাগত গভীর রাতে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে রিপন তার সহযোগীরা শাহজাহান ও সুরুজ মাতুবরের ট্রলারে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে। মঙ্গলবার রাতে দুইজনকে আটক করেছি।
আটকৃত আসামিরা সাবেক এমপি চৌধুরীর সমর্থক ও আওয়ামীলীগের কর্মী বলে জানা যায়।
তাছাড়া আসামিদের বিরুদ্ধে বৈষম্য ছাত্র বিরোধী আন্দোলনের সময় তারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার দুপুরে আসামীদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।