আলিফ হোসেন, তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরের পাঁচন্দর ইউনিয়নের(ইউপি) মোহাম্মদপুর গ্রামে কৃষকের আলুখেতে পুকুর থেকে পানি সেচ দিতে বাধা দেবার অভিযোগ উঠেছে। এতে ১৫ বিঘা আলুখেত নিয়ে নিরহ কৃষক পরিবার চরম বিপাকে পড়েছেন। এ ঘটনায় কৃষক নমির উদ্দিন বাদি হয়ে ইমতিয়াজ বকুলের বিরুদ্ধে তানোর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার মোহাম্মদপুর মৌজায় দুটি এস,টি,ডাব্লিউ সেচ মটর রয়েছে। এসব মটরের মালিক কুন্দাইন গ্রামের হামেদ হাজির পুত্র মোজাহার আলী।কিন্ত্ত একটি মটর দেখভাল করেন ইমতিয়াজ বকুল অপরটি দেখভাল করেন আনারুল ইসলাম। এদিকে মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত তাহির উদ্দিনের পুত্র বিএনপি মতাদর্শী নমির উদ্দিনের ১০ বিঘা জমি রয়েছে আনারুলের স্কীমে ও ১৫ বিঘা জমি রয়েছে বকুলের স্কীমে।
গ্রামবাসী জানান, আনারুলের স্কীমে ১০ বিঘা জমিতে সেচ নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্ত্ত নমির বিএনপি মতাদর্শী হওয়ায় বকুলের স্কীমে ১৫ বিঘা জমিতে দীর্ঘদিন যাবত ঠিকমত সেচ দেয়া হয়নি।এমনকি গত বছর জমি টেন্ডারের টাকা বকুল জমির মালিক নমিরকে দেননি। কয়েক বার তার জমির ফসল সেচ না দিয়ে নস্ট করা হয়েছে।এছাড়াও বকুলের মটর থেকে অবৈধভাবে জোরপুর্বক গভীর নলকুপের কমান্ড এরিয়ায় আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে।
এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নমির উদ্দিন বাধ্য হয়ে তার ১৫ বিঘা জমিতে নিজের পুকুর থেকে সেচ দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এতে তার বিপুল অঙ্কের টাকা পকেট থেকে বেরিয়ে গেছে। কিন্ত্ত ১৫ বিঘা জমিতে আলু রোপণের পর নমির উদ্দিন তার পুকুর থেকে সেচ দিতে গেলে ইমতিয়াজ বকুল বাধা প্রদান করছে।অথচ একবিঘা জমিতে আলু চাষ করতে এবার গড় ৯০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। অন্যদিকে বকুলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে, পল্লী বিদ্যুৎ অদৃশ্য কারণে অতিউৎসাহী হয়ে নমিরের পুকুরে পানি সেচের শিল্প সংযোগ বিচ্ছিন্ন করণের হুমকি দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় বাসাবাড়ি ও অবৈধ মটর থেকে গভীর নলকুপের কমান্ড এরিয়ায় সেচ বাণিজ্য করা হচ্ছে। যা পল্লী বিদ্যুতের একশ্রেণীর কর্মকর্তাদের মদদেই হচ্ছে।অথচ নমির উদ্দিনের নিজস্ব আলুখেতে পুকুর থেকে সেচ দিতে পল্লী বিদ্যুতের বাধা কেন ? পল্লী বিদ্যুতের এমন দ্বিমুখী আচরণে ভুক্তভোগী কৃষকের বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে ইমতিয়াজ বকুল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মোজাহারের কাছে থেকে তিনি সেচ মটর কিনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, তার স্কীমে নমিরের জমি আছে, এসব জমিতে তিনি সেচ দিবেন। কিন্ত্ত নমির জোরপুর্বক তার পুকুর থেকে এসব জমিতে সেচ দিবেন যা অন্যায়, তাই তিনি অভিযোগ করেছেন।
এবিষয়ে নমির উদ্দিন বলেন,তিনি বিএনপি মতাদর্শী হওয়ায় বিগত দিনে বকুল তার জমিতে ঠিকমত সেচ না দেয়ায় বেশ কয়েকবার ফসলহানি হয়েছে। এমনকি গত বছরের জমি টেন্ডারের টাকাও বকুল তাকে দেননি। তিনি বাধ্য হয়ে মাছ চাষের পুকুর থেকে সেচের ব্যবস্থা করেছেন।তিনি বলেন,অনেকে আবাসিক ও বানিজ্যিক সংযোগ নিয়ে গভীর নলকুপের কমান্ড এরিয়ায় সেচ বাণিজ্যে করছে,যেটা পল্লী বিদ্যুৎ জানে, তাহলে তার নিজের জমিতে পুকুর থেকে সেচ দিলে সমস্যা কোথায়।এবিষয়ে জানতে চাইলে তানোর পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা (ডিজিএম) জহুরুল ইসলাম বলেন, ইমতিয়াজ বকুলের অভিযোগ পাওয়া গেছে, করেছেন তদন্ত করে দেখা হবে।